বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২ এর আয়োজনে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। আর সেই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর কথা এবার স্বীকার করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ পকল্পের প্রধান হাসান আল-তাওয়াদি এক সাক্ষাৎকারে এ কথা স্বীকার করেন।

তবে হতাহতের সংখ্যা কত তা সঠিক ভাবে জানাতে পারেননি তিনি। এর আগে কাতার মৃত শ্রমিকদের যে সংখ্যার কথা বলেছিল তা থেকে এই সংখ্যা অনেক বেশি। আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এপি ও সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।

ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসান আল-তাওয়াদি বলেন, ‘সংখ্যাটি সম্ভবত ৪০০ জনের মতো, ৪০০ থেকে ৫০০ এর মধ্যে। আমার এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি জানা নেই, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একজনের মৃত্যুও অনেক বেশি, বিষয়টি এমনই।’

বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে কাতারে কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন, যাদের বেশিরভাগই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সেখানে কাজ করছেন বলে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে।

হাসান আল-তাওয়াদি মৃতদের সংখ্যা জানানোয় মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজনকারী কাতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সমালোচনা আরও জোরালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবশ্য কাতার আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কিছু বলেনি। সুপ্রিম কমিটির এক প্রতিবেদনে ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণ ও সংস্কারকাজে মৃত শ্রমিকদের সংখ্যা উলে­খ করা হয়েছিল। এতে মৃত শ্রমিকের সংখ্যা মাত্র ৪০ জন বলে দাবি করা হয়। এর মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকের, কাজ সংশ্লিষ্ট না এমন কারণে হয়েছে বলা হয়। আর মাত্র তিনজন কর্মস্থলের ঘটনায় মারা যান। পৃথক প্রতিবেদনে এক শ্রমিকের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে বলে উলে­খ করা হয়।

এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের গত বছরের একটি প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে সিএনএন লিখেছে, ২০১০ সালে কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজার দক্ষিণ এশীয় প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে সেদেশে, যাদের বেশিরভাগই কম মজুরির, বিপদজনক কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং প্রায়ই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের কাজ করতে হত।

অবশ্য গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে উলে­খ করা হয়েছে, সব মৃত্যুই বিশ্বকাপের অবকাঠামো নির্মাণের কাজে সংশ্লিষ্ট বলে প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। সিএনএনও নিরপেক্ষভাবে মৃত্যুর তথ্য যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।